রোবটিক্স! আগামী বিশ্বে রোবটের কর্তৃত্ব।
ধরুণ, আপনি গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন। খুব মিস্টি একটা স্বপ্নে তলিয়ে আছেন, এমন সময় কোন একটা যন্ত্র আপনাকে ঘুম থেকে টেনে তুলে খাটে বসালো। আপনি বিরক্তি সহকারে মেশিনটির দিকে তাকাতেই মেশিনটি মনে করিয়ে দিলো, এটি একটি রোবট। আপনারই ক্রয়কৃত রোবট, যাকে আপনি গতরাতে শোয়ার আগে প্রোগ্রামে সেট করে দিয়েছেন যে, আপনাকে যেন সকাল ৬টা নাগাদ ঘুম থেকে তোলে দেয়া হয়। কারণ, আপনার ৮টায় অফিস।
আপনি ঘুম ঘুম চোখে খাটে বসে আছেন, রোবটটি আপনার সামনে টুথ ব্রাশ, টুথপেস্ট এবং গোসলের জন্য প্রয়োজনীয় কাপড় নিয়ে হাজির। আপনি বাথরুম থেকে গোসল সেরে বের হয়ে দেখলেন, খাবার টেবিলে আপনার নাস্তা হাজির। আপনি নাস্তা সেরে উঠে দাঁড়ানোর আগেই আপনার রোবট আপনার অফিসে যাওয়ার ড্রেস নিয়ে হাজির হয়ে আপনাকে পোশাক পরায় হেল্প করলো। আপনি লিফটে করে নেমে গেইটে যেতে যেতে আপনার রোবট আপনার গাড়ি ড্রাইভ করে আন্ডারগ্রাউন্ড থেকে বের করে নিয়ে এসেছে। আপনি আপনার সিটে বসলেন, আপনার রোবটটি আপনাকে শাঁই শাঁই ড্রাইভ করে নিয়ে যাচ্ছে অফিস বরাবর।
কি! অবিশ্বাস্য মনে হচ্ছে? হতেই পারে, তবে রোবটিক্সের কল্যাণে সেই অবিশ্বাস্য ব্যাপারটাই খুব তাড়াতাড়ি আমাদের জীবনে সত্য হতে যাচ্ছে। হয়তো খুব বেশি দেরী নেই। আমাদের সবারই হয়তো পার্সোনাল এসিস্ট্যান্ট হিসেবে থাকবে এমন একটা আর্টিফিশিয়াল ইন্ট্যালিজেন্স বা রোবট। যা পরিচালিত হবে রোবটিক্সের সুদক্ষ প্রোগ্রামিং এর মাধ্যমে।
আমি জানি, আপনি এখন কল্পনা করছেন, তেমনি একটি পার্সোনাল এসিস্ট্যান্ট রোবটের। যা আপনার প্রতিটি কাজে সাহায্য সহযোগিতার পাশাপাশি আপনার দুঃসাধ্য যত কাজ তা করে দিবে চোখের পলকে। তাহলে আর দেরী কেন? চলুন রোবটের মালিক হওয়ার আগেই জেনে নিন, রোবট এবং রোবটিক্স সম্পর্কে বিস্তারিত।
রোবটিক্স কী?
রোবটিক্স হলো প্রযুক্তির এমন একটি শাখা যেখানে রোবট বা আর্টিফিশিয়াল ইন্ট্যালিজেন্স সমূহের ডিজাইন, নির্মাণ, কার্যক্রম, পরিচালনা, উন্নয়ন ও প্রয়োগ নিয়ে কাজ করা হয়। নিউ কলিগেইট ডিকশনারীর মতে “রোবট হচ্ছে একটি স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থা বা প্রক্রিয়া যা মানুষ যেভাবে কাজ করতে পারে সেভাবে কাজ করে অথবা এর কাজ দেখে মনে হয় এর বুদ্ধিমত্তা আছে।
আচ্ছা, সংজ্ঞায়নটা মনে হয় ততোটা বুঝার উপযোগী হয়নি। চিন্তার কিছু নেই, আমি সহজভাবে আলোচনা করছি, রোবটিক্স হলো বিজ্ঞানের এমন একটি শাখা যেখানে কম্পিউটারের একটি নির্দিষ্ট শাখাকে নিয়ে আলোচনা করা হয় এবং এই শাখার কম্পিউটার নিয়ন্ত্রিত ডিভাইসগুলো নড়াচড়া করতে পারে, বাস্তব জগতের সাথে মিথিস্ক্রিয়া করতে পারে এবং এত কঠিন সব কাজ করতে পারে যা মানুষের পক্ষে অসম্ভব কিংবা ভয়াবহ ঝুঁকির কারণ।
অবাক লাগছে? মানুষ যা পারে না বা মানুষের পক্ষে যা অসম্ভব তা রোবট পারে? অবশ্যই পারে। উদাহরণ হিসেবে চিন্তা করলে- মানুষের পক্ষে জাহাজ নির্মাণ শিল্পের একটি সেক্টর হচ্ছে ওয়াল্ডিং। এই ওয়াল্ডিং এর সময় এতো বেশি তাপের সৃষ্টি হয় যেখানে মানুষের পক্ষে টিকে থাকা অসম্ভব। অথচ রোবট সেখানে ঘন্টার পর ঘন্টা এতো উচ্চ মানের তাপ সয়েও কাজ করে যেতে পারে অবলীলায়। এমন আরো অনেক উদাহরণ আছে। যেমন- গভীর সমুদ্রে অনুসন্ধান, মহাকাশের গ্রহ উপগ্রহে গমন, মেরু অঞ্চলের বরফাঞ্চলে অভিযানসহ আরও আরও অনেক অনেক অসম্ভব কাজকে খুব সহজেই সম্ভব করছে রোবটিক্স।
রোবটিক্স শব্দের উৎপত্তি-
রোবোট (Robot) শব্দটার উৎপত্তি “Robota” মতান্তরে “roboti” শব্দ থেকে। শব্দটির প্রবক্তা ছিলেন ক্যারেল ক্যাপেক, যিনি বিংশ শতাব্দীর শুরুর দিকে সাইন্স ফিকশন লেখার জন্য বিখ্যাত ছিলেন। ‘Robota’ শব্দটার মানে হল দাস (slave) বা কর্মী (worker)। এবং রোবটিক্স শব্দটি এসেছে ‘রোবট’ শব্দ হতে যা প্রবর্তিত হয় সেই চেক লেখক ও নাট্যকার কারেল কাপেক এর একটি নাটক থেকে যা ১৯২০ সালে প্রকাশিত হয়। রোবট (Robot) শব্দটি এসেছে মূলত স্লাভিক শব্দ “রোবোটা” হতে যার অর্থ হলো শ্রমিক। অক্সফোর্ড ইংলিশ ডিকশনারি অনুযায়ী “রোবটিক্স” শব্দটি সর্বপ্রথম প্রিন্টে ব্যবহার হয় ‘আইজ্যাক অসিমভ এর ছোট সায়েন্স ফিকশন গল্প “লায়ার” এ যা ১৯৪১ সালে প্রকাশিত হয়েছিল।
রোবটিক্স এর ব্যবহারসমূহ-
ম্যানুফ্যাকচারিং
বর্তমানে মিল ফ্যাক্টরিতে রোবটিক্সের সবচেয়ে বেশি ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়। আমরা অনেকেই ন্যাশনাল জিওগ্রাফি কিংবা ডিসকভারি চ্যানেলের গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর ভিডিওতে যে লম্বা হাতল যুক্ত মেশিনগুলো দেখতে পাই। যেগুলো তাদের লম্বা হাতের সাহায্যে গাড়ির পার্টগুলো খুব নিপুণভাবে সংযোজন করে, সেই মেশিনগুলোই হচ্ছে রোবট যা রোবটিক্সের প্রোগ্রামিং কোডের মাধ্যমে চলমান থাকে।
বিপজ্জনক কাজে
মানুষের জন্য যেসব কাজ বিপদজনক সেসব কাজ খুব সহজেই রোবট করতে পারে কোনো প্রকার ঝুঁকি ছাড়াই। যেমন- কোথাও বোম থাকার সংবাদ আসলে সেখানে মানুষের অবস্থান করা মারাত্নক ঝুঁকির কাজ অথচ রোবট সেখানে অনায়াসে কোন প্রকার ভয় পাওয়া ব্যতিতই অবস্থান করতে পারে এবং তাকে প্রদত্ত ইনপুট প্রোগ্রামের মাধ্যমে বোম নিষ্ক্রিয় করে দিতে পারে।
ভারী শিল্প কারখানায়
ভারী শিল্প কারখানা বলতে মূলত ইস্পাত, জাহাজ, নির্মাণ সামগ্রী, স্টিল, গাড়ি ইত্যাদিতে কিছু কিছু অংশে মানুষের প্রবেশ রীতিমতো অসম্ভব হয়ে পরে। ফলে সেখানে রোবট পাঠানো হয়। সেখানে ব্যবহৃত রোবটগুলো অতি মাত্রায় তাপ সহনশীল। এবং রোবটের মৃত্যু ঝুঁকিও নেই।
নিরাপত্তার কাজে
বর্তমানে সিকিউরিটি গার্ড হিসেবে রোবটের ব্যবহার দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। মানুষের চেয়েও সিকিউরিটি সেক্টরে রোবট সাফল্য দেখাতে পারছে বহুগুণ। রাতের সিকিউরিটি ডিউটিতে মানুষের ডাকাত কিংবা ছিনতাইয়ে কবলে পড়ার ভয় থাকলেও রোবট এক্ষেত্রে সম্পূর্ণ নিরাপদ। বুঝতে একটু কষ্ট হচ্ছে! সহজে বলি, ধরুণ আমরা প্রায়ই দেখতে পাই এটিএম বুথের সিকিউরিটি গার্ডদেরকে মারধর করে টাকা ছিনতাই হয়। অনেকে নিহতও হয়। তবে এক্ষেত্রে রোবট সিকিরিটিতে নিরাপাদ। এরা অনেকাংশেই ছিনতাইকারীদের প্রতিহত করতে পারে।
চিকিৎসায়
বর্তমানে টেলিমেডিসিনে রোবটের ব্যবহার ঈর্ষণীয় সাফল্য প্রতিয়মাণ হয়েছে। চিকিৎসা ক্ষেত্রে রোবটিক্স বর্তমানে ইনজেকশান পুশ করা থেকে শুরু করে জটিল অপারেশন পর্যন্ত করতে সক্ষম হচ্ছে। এমনকি বিদেশে বিশেষজ্ঞ ডাক্তার ভিডিও কনফারেন্সে রোবটকে কমান্ড প্রদান করলে রোবট তা দেশের হসপিটালেই অপারেশন সম্পন্ন করতে পারছে। ফলে দেশে বসেই জটিল সব রোগের চিকিৎসা সম্ভবপর হচ্ছে এই রোবটিক্সের কল্যাণে।
সামরিক ক্ষেত্রে
বর্তমান সময়ে যুদ্ধক্ষেত্রেও রোবটের ব্যবহার আশানুরূপ সাড়া ফেলেছে। প্রাচীনকাল থেকেই যুদ্ধ বিগ্রহ মানেই লক্ষ কোটি প্রাণনাশের এক মহায়োজন। কিন্তু সম্প্রতি যুদ্ধক্ষেত্রে রোবটিক্স ড্রোন ব্যবহার করা হচ্ছে। যা মানুষের বিকল্প হিসেবে সবচেয়ে বড়ো সাফল্যগুলোর একটি বলে পরিগণিত হচ্ছে।
মহাকাশ গবেষণায়
বিজ্ঞানের অগ্রযাত্রায় রোবটিক্স যোগ করেছে এক নতুন মাত্রা। মহাকাশ কিংবা গ্রহ, উপগ্রহে মানুষের অভিযানে ফিরে আসার সম্ভবনা একবারেই কম। কিন্তু মহাকাশসহ অক্সিজেন শূণ্য এমন পরিস্থিতিতেও রোবট টিকে থেকে প্রয়োজনীয় তথ্য উপাত্ত নিয়ে রোবট ফিরে আসতে পারে অনায়াসে।
ঘরোয়া কাজে ও রেস্টুরেন্ট
ইতোমধ্যেই ঘরোয়া এবং রেস্টুরেন্ট এর কাজে রোবটের ব্যবহার শুরু হয়েছে। মানুষের চেয়েও কম সময়ে এরা খাবার পরিবেশনসহ ঘরোয়া যেকোনো কাজ করতে পারে খুব সহজে। ফলে এই সেক্টরের নির্ভরশীলতা রোবটিক্সের উপর বৃদ্ধি পাচ্ছে বহুগুণে।
রোবট এবং রোবটিক্স-এর মধ্যে পার্থক্য-
এতোক্ষণ পড়ে হয়তো রোবট এবং রোবটিক্সের মাঝে খুব একটা পার্থক্য করতে পারছেন না। তাহলে চলুন জেনে নেই, রোবট এবং রোবটিক্সের মাঝে পার্থক্য-
রোবট এবং রোবটিক্সের মাঝে পার্থক্যের বিষয়টি খুবই সুস্পষ্ট। রোবট হলো তৈরিকৃত বস্তু বা মেকানিজম। আর এই মেকানিজম নিয়ে যে শাখায় বিস্তর গবেষণা, উন্নয়ন, পরিবর্ধন, সংযোজন, বিয়োজন নিয়ে কাজ করা হয় তাকেই বলা হয় রোবটিক্স। রোবটিক্স আসলে আর্টিফিশিয়াল ইন্ট্যালিজেন্স এর একটি প্রায়োগিক শাখা। রোবটিক্সের সাথে মেকানিক্যাল, ইলেক্ট্রিক্যাল এবং সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং ওতপ্রোতভাবে জড়িত। অর্থাৎ এই তিনটি ইঞ্জিনিয়ারিং সাইটের সমন্বিত আউটপুটই হচ্ছে রোবটিক্স বা আর্টিফিশিয়াল ইন্ট্যালিজেন্স। আর রোবটিক্স বা আর্টিফিশিয়াল ইন্ট্যালিজেন্স ব্যবহার করে যে প্রযুক্তিগুলো তৈরি করা হয় সেগুলোই রোবট।
রোবটিক্স ইঞ্জিনিয়ারদের কাজের ক্ষেত্রসমূহ-
রোবটিক্স ইঞ্জিনিয়ারদের কাজের ক্ষেত্রসমূহ দিন দিন বিস্তৃত আকার ধারণ করছে। রোবটিক্স এর কাজের ক্ষেত্রগুলোর মধ্যে রয়েছে গণিত, পদার্থবিজ্ঞান, কম্পিউটার বিজ্ঞান, প্রোগ্রামিং, প্রযুক্তি ও ডিজাইন, মেকাট্রনিক্স এবং মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, বায়োঞ্জিনিয়ারিং, মোটর ইঞ্জিনিয়ারিং এবং ইলেকট্রনিক্স। এসকল বিষয়গুলোর যেকোনো একটি বিষয়ের কথা যদি আপনি চিন্তা করেন তবে দেখবেন দেশে বিদেশে এই সাবজেক্টগুলোর কদর সবার উপরে। এজন্য আপনি রোবটিক্স ইঞ্জিনিয়ার হতে পারলে মহাকাশ গভেষণা থেকে শুরু করে প্রোগ্রামিং যেকোনো সেক্টরে কাজ করতে পারবেন অনায়সে। এছাড়া বড়ো বড়ো টেক জায়ান্ট কোম্পানি যেমন- গুগল, ফেইসবুকসহ অসংখ্য গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠানে আপনার চাকুরি হওয়া সময়ের ব্যাপার মাত্র। এছাড়া একজন রোবটিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং প্রোডাকশন সম্পর্কিত যেকোনো হাই প্রোফাইল কোম্পানিতে কাজ করা তো মামুলি ব্যাপার মাত্র।
নিয়ন্ত্রণ প্রক্রিয়ার উপর ভিত্তি করে রোবটকে ০৩ (তিন) ভাগে ভাগ করা যায় –
ম্যানুয়াল রোবট – এই ধরনের রোবটকে ম্যানুয়ালি অর্থাৎ আদেশ দানের মাধ্যমে চালানোর প্রয়োজন হয় । এগুলো নিজে নিজে কাজ করতে পারে না । ভারী ক্রেন হল ম্যানুয়াল রোবটের একটি ক্লাসিক উদাহরণ ।
সেমি অটোনোমাস রোবট – এগুলি এমন ধরণের রোবট যা ইউজার আগে থেকে কিছু কমান্ড দিয়ে রাখে এবং সে অনুযায়ী বাকি কাজ নিজেরাই সম্পাদন করে । এই ধরনের রোবটকে চালানোর জন্য ধাপে ধাপে ইন্সট্রাকশন দেওয়ার প্রয়োজন হয় না ।
অটোনোমাস রোবট – এই ধরণের রোবট, তাদের সমস্ত কাজ সম্পূর্ণরূপে নিজেরাই করতে সক্ষম । এই ধরণের রোবটগুলি সেন্সরের সাথে সংযুক্ত থাকে, যা মাইক্রো-কন্ট্রোলারের মাধ্যমে রোবটের গতিবিধি সনাক্ত করতে পারে এবং গাইড করতে পারে । ফায়ার ফাইটিং রোবট অটোনোমাস রোবটের একটি খুব ভাল উদাহরণ ।
যখন কোন রোবট তৈরি করা হয়, তখন বিভিন্ন কাজ করার জন্য বিভিন্ন ধরনের মেশিনের প্রয়োজন হয় এবং এটি নিম্লিখিত অংশ নিয়ে গঠিত –
- সেন্সর সিস্টেম: আপনারা সবাই জানেন যে, আমাদের শরীরে ৫ টি ইন্দ্রিয় আছে, যেগুলোর মাধ্যমে আমরা আমাদের চারপাশের পরিবেশের সবকিছু দেখতে এবং অনুভব করতে পারি । রোবটের ক্ষেত্রে এগুলো করার জন্য বিভিন্ন ধরনের সেন্সর রোবটের মধ্যে ইনস্টল করা হয় । এই সেন্সর গুলোর মাধ্যমে রোবট বুঝতে পারে যে, এটিকে কী নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে এবং সামনে কী ধরণের কাজ আসতে চলেছে । রোবটের ক্ষেত্রে আই সেন্সর, প্রেসার সেন্সর এবং সোনার সেন্সর ইত্যাদি ইউজ করা হয় । এগুলো ছাড়াও রোবটে অনেক ধরনের সেন্সর ব্যবহার করা হয়, যাতে এটি তার চারপাশের পরিবেশ খুব ভালভাবে অবজারভ করতে পারে ।
- স্ট্রাকচার বডি: যে কোনো ধরনের রোবট নির্মাণ করার আগে, এর ভৌত গঠনের সম্পূর্ণ স্ট্রাকচার প্রস্তুত করতে হয় এবং পরবর্তীতে সেই অনুযায়ী তার কাজের ক্ষেত্র বিবেচনা করে বিভিন্ন ধরনের ডিভাইস বসানোর কাজ শুরু করা হয় ।
- পাওয়ার সোর্স: মানুষের যেমন চলাফেরা বা টিকে থাকার জন্য শক্তির প্রয়োজন হয় তাই খাবার খায় তেমনি রোবটের চলাফেরা করার জন্যও শক্তির প্রয়োজন হয়। আর সেই শক্তি আসে ব্যাটার, সৌরশক্তি কিংবা জ্বালানী তেল থেকে।
- মাস্কুলার সিস্টেম: একটি রোবট নির্মাণেও মাস্কুলার সিস্টেম ইউজ করা হয়, যাতে এটি সঠিকভাবে তার কাজগুলি সম্পাদন করতে পারে । এটা অনেকটা আমাদের দেহের গঠনের মতোন। কোন রোবট কোন কাজ করবে তা উপর ভিত্তি করে তার দেহের ডিজাইন করা হয়ে থাকে।
- ব্রেন সিস্টেম: কাজ করার জন্য যেমন মানুষের মস্তিষ্কের প্রয়োজন হয় তেমনি রোবটেরও প্রয়োজন হয় জ্ঞানগর্ব দিক নির্দেশনার। রোবটের মস্তিষ্ক হলো ব্রেন এবং সে ব্রেনে তাকে কাজ করার জন্য দেয়া হয় যাবতীয় প্রোগ্রামিং কমান্ড।
এতোটুকু আলোচনা পড়ে আসলে রোবটিক্সের গুরুত্ব আর বুঝার বাকি থাকে না। তবুও রোবটিক্সের গুরুত্ব আলোচনা করতে গেলে বলতে হয় আগামী উন্নতবিশ্বে রোবট বা রোবটিক্স এক বিপ্লবের নাম। মানুষ মাত্রই চায় তার কাজটা সহজ হোক। সময় সাশ্রয় হোক। নিরাপদ হোক। সেক্ষেত্রে সে যে প্রযুক্তির সাহায্য নিতে পারে তা নিঃসন্দেহে রোবট। বিজ্ঞানীরা ধারণা করছেন, আগামী বিশ্বে রোবট হবে মানুষের একমাত্র কর্মচারী। বাজার করা থেকে শুরু করে শিল্প কারখানার কাজ সকল কিছুই মানুষ রোবটের সাহায্যে করিয়ে নিবে। এর এমনটা যদি হয় তবে আপনি হবেন ওনেকগুলো রোবটের মালিক। হা হা হা। আপনার হুকুমে তারা ছুটে বেড়াবে নাস্তা তৈরি থেকে শুরু করে,অফিসের কাজ পর্যন্ত।