ESP32 মাইক্রোকন্ট্রোলারের অজানা কিছু তথ্য

নব ঘুরিয়ে টিভির চ্যানেল পরিবর্তন করার প্রসেসটি আজ নিতান্তই দাদু-নানু’র কাছে শোনা ঐতিহাসিক গল্প মাত্র। বৈপ্লবিক পরিবর্তন এসেছে প্রযুক্তিতে, শুধু টিভি’র চ্যানেল পরিবর্তন নয়, বরং এয়ার কন্ডিশনার, হিটার, রুম-লাইট, এবং ফ্যানের স্পিড পরিবর্তনের জন্যও সবার হাতে হাতে এখন রিমোট। সাথে যুক্ত হয়েছে ইন্টারনেট ব্যবহার করে স্মার্ট ফোনের এ্যাপ দিয়ে ডিভাইস নিয়ন্ত্রণের ট্রেন্ড ।

ESP32_Unknown_Facts_Voice_Recognition_with_Microcontroller.

বিশ্ব যখন ২০৫০ কে নিয়ে স্বপ্ন দেখছে, সেখানে আজও আমরা সেকেলে Op-Amp ব্যবহার করে Night Light Switch তৈরিকে ইনোভেশন বলছি!

অন্যদিকে আমাদের মতোই একদল তরুন বিজ্ঞানী International Robot Olympiad এ অংশ নিয়ে বাংলাদেশের জন্য Awards নিয়ে আসছে। আমরা কি কখনো ভেবে দেখেছি, আমাদের গতানুগতিক চিন্তা-ভাবনা গুলোর অবস্থান কোথায়?

ESP32_Unknown_Facts_Robotics_Competition

তবে দুশ্চিন্তার কোনো কারণ নেই, সময় এখনো শেষ হয়ে যায়নি। বরং এটিই উপযুক্ত সময় নিজেকে পরিবর্তন করার। ChatGPT, Google Search, YouTube Videos এবং Blog Tutorials এর মত অনলাইন রিসোর্স গুলো এখন তোমাকে ফ্রিতে  জ্ঞান দেওয়ার জন্য ওৎ পেতে রয়েছে। এখন অপেক্ষা শুধু, তোমার আগ্রহের। 

শুধু আগ্রহ থাকলেই চলবে না। আগ্রহের পাশাপাশি জ্ঞান-অর্জন এবং জ্ঞানের-প্রয়োগ উভয়ের মধ্যে পার্থক্য জানতে হবে। জ্ঞান অর্জন হলো যা তুমি দেখে, পড়ে এবং করে শিখছো। অপরদিকে জ্ঞান-প্রয়োগ হলো তোমার অর্জিত জ্ঞানের বাস্তবিক রূপ বা এপ্লিকেশন। আর উদ্ভাবন বা ইনোভেশনের জন্য প্রয়োজন হবে যথেষ্ট জ্ঞান প্রয়োগের দক্ষতা ও সৃজনশীলতা (Creativity)। তাই জ্ঞানের-প্রয়োগ করতে সর্বপ্রথম জ্ঞান-অর্জন করার প্রয়োজন এবং ইনোভেশন বা উদ্ভাবনের জন্য দরকার হবে পর্যাপ্ত জ্ঞান বা অভিজ্ঞতা।

ধরো একটি YouTube Video বা Blog Tutorial দেখে তুমি একটি প্রোজেক্ট তৈরি করেছো। এটা কিন্তু কোন Innovation নয়। বরং এটি করার মাধ্যমে তুমি জ্ঞান অর্জনের চেষ্টা করছো। আর জ্ঞান অর্জনের ক্ষেত্রে কপি/পেষ্ট এর বিপরীতে তুমি যদি প্রতিটি ধাপ বুঝে বুঝে আগাও, তাহলে হয়তো এমন শত-প্রোজেক্টের জ্ঞান ও সমস্যা সমাধানের সক্ষমতা তোমাকে নতুন কিছু তৈরি করা বা Innovation করতে অনুপ্রেরণা দিবে।

ESP32_Unknown_Facts_Innovation

বহুল ব্যবহৃত কিছু মাইক্রোকন্ট্রোলার

চলো তাহলে আর কথা না বাড়িয়ে, মনোযোগ দেই আমাদের আজকের টপিক: মাইক্রোকন্ট্রোলার নিয়ে। বর্তমান যুগে সব থেকে বহুল পরিচিত একটা শব্দ হচ্ছে ইন্টারনেট অব থিংস (আইওটি)। আমরা জানি, রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি (আরএফ) বা Bluetooth কন্ট্রোল ডিভাইসের ক্ষেত্রে একটি সীমাবদ্ধতা রয়েছে। অপরদিকে ইন্টারনেট ব্যবহার করে পৃথিবীর যেকোনো প্রান্তে যোগাযোগ করা সম্ভব। যেমন তুমি বাংলাদেশে বসে কম্পিউটার ব্যবহার করে আমেরিকার একটি ওয়েবসাইট YouTube কে এক্সেস করতে পারছো। 

কিন্তু ছোট এপ্লিকেশনের ক্ষেত্রে এত বড় একটি ডেক্সটপ/ল্যাপটপ ব্যবহার করা নিশ্চয় Space এবং Cost Efficient হবে না। তাই প্রয়োজন হবে একটি ছোট কম্পিউটার সিস্টেমের, যা মাইক্রোকন্ট্রোলার নামে পরিচিত। বাজারে বিভিন্ন কাজের জন্য উপযোগী বিভিন্ন ধরণের মাইক্রোকন্ট্রোলার রয়েছে। যেমন AVR, PIC, Arduino, STM, ESP, Raspberry Pi ইত্যাদি। 

ESP32_Unknown_Facts_Various_Microcontroller

তোমরা যারা মাইক্রোকন্ট্রোলার নিয়ে In-Depth শিখতে চাও, তারা নিশ্চিন্তে AVR, PIC অথবা STM সিরিজের মাইক্রোকন্ট্রোলার নিয়ে শুরু করতে পারো। তবে এই প্রসেসটি বেশ সময় সাপেক্ষ হতে পারে। খুব Strong Guider বা Instructor এর সাথে সংস্পর্শে না থাকলে, কঠিন ভেবে নিরুৎসাহিত হয়ে যেতে পারো। 

অপরদিকে Fast Prototyping এর জন্য Arduino, ESP বা Raspberry Pi সিলেক্ট করতে পারো। এই তিনটি মাইক্রোকন্ট্রোলার দিয়ে তুমি সব ধরণের কাজ (যেমনঃ আইওটি, হোম-অটোমেশন, বা রোবটিক্স) করতে পারবে। কিন্তু এই তিনটি মাইক্রোকন্ট্রোলার তাদের হার্ডওয়্যার সেটাপের উপর ভিত্তি করে, তিনটি ভিন্ন ভিন্ন কজে বিশেষিত। 

ESP32

যেমন যদি তুমি Internet of Things (IoT) রিলেটেড কাজে ফোকাস করতে চাও, তাহলে ESP32 তোমার পছন্দের তালিকায় রাখতে পারো। 

ESP32_Unknown_Facts_IoT_Using_ESP32

আরডুইনো

আবার তোমার ফোকাস যদি হয়ে থাকে Robotics and Automation তাহলে Arduino তোমার জন্য Right Choice হতে পারে। 

ESP32_Unknown_Facts_Arduino_Robot

রাস্পবেরি-পাই

অপরদিকে তুমি যদি Data Science, Artificial Intelligence (AI) বা Machine learning (ML) নিয়ে কাজ করতে চাও, তাহলে Raspberry Pi তোমার পছন্দের সেরা মাইক্রোকন্ট্রোলার সিস্টেম হতে পারে। 

ESP32 দিয়ে IoT যাত্রার সূচনা: বেসিক থেকে অ্যাডভান্সড লেভেল

এই ধারাবাহিক টিউটোরিয়্যালে, আমি Internet of Things (IoT) নিয়ে in-depth আলোচনা করব। টিউটরিয়্যাল গুলোর মাধ্যমে আমি তোমাদের একদম বেসিক থেকে শুরু করে অ্যাডভান্সড লেভেল পর্যন্ত প্রত্যেকটি বিষয়ে স্পষ্ট ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করব। আশা করি টপিকগুলো শেষ করার পর, তুমি একজন দক্ষ Embedded System Developer হয়ে উঠতে পারবে এবং নিজের সৃজনশীল চিন্তাগুলোকে বাস্তবে রূপ দিতে সক্ষম হবে।

আর তাই আমাদের এই ইন্টারনেট অব থিংস (আইওটি) Journey তে, মাইক্রোকন্ট্রোলার হিসাবে নির্বাচন করবো ESP সিরিজের বেশ পপুলার একটি ডেভেলপমেন্ট বোর্ড ESP32 Development Board DEVKIT V1। 

আজ এ পর্যন্তই। পরবর্তী বেশ কয়েকটি টিউটরিয়্যালে আমরা ESP32 Development Board DEVKIT V1 এর হার্ডওয়ারের গঠন সম্পর্কে In-Depth আলোচনা করবো। যাতে ভবিষ্যতে যে কোন ধরণের Customized Development বা Hardware Problem ইত্যাদি ইস্যুতে তোমরা নিজেরাই যে কোন সমস্যার সমাধান করে নিতে পারো। 

ভালো থেকো। আল্লাহ হাফেজ। 

Mahbub Morshed Rifat
Mahbub Morshed Rifat

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.